ভূমিকা
পৃথিবীর ইতিহাসে প্রত্যেকটা দেশ বা জাতির গর্ব করার মতো বা অহংকার করার মতো নিজ্স্ব কিছু ইতিহাস ঐতিহ্য বা শ্রেষ্ঠতম অধ্যায় থাকে। যা যুগ যুগ ধরে হৃদয়ে লালন করে দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়। তেমনি বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম অধ্যায় হলো ভাষা আন্দোলন এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের গর্ব করার মত একান্ত সম্পত্তি বলতে এ দুটো বিষয়। পৃথিবীর ইতিহাসে ভাষার জন্য একমাত্র বাঙ্গালী জাতিই বুক পেতে বুলেটের সামনে দাড়িঁয়ে জীবন দিয়েছে, এবং সেই ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্মলাভ করে বাংলাদেশ নামক ভূ-খন্ডের। এই বাংলাদেশ হঠাৎ করেই জন্ম হয়নি, তার পিছনে রয়েছে সুদীর্ঘ শোষণ, নিপিড়ন নির্যাতন, বৈষম্য আর বঞ্চনার ইতিহাস। মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহীদ, দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম এবং রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত আজকের বাংলাদেশ। যারা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং শোষণমুক্ত বাংলাদেশের জন্য এত বড় আত্মত্যাগ করলো, আমরা তাদেরকে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা, এবং বীরাঙ্গনা বলে ডাকি।
উদ্দেশ্য
আমাদের দেশে বসবাসের জন্য বিভিন্ন পেশাজীবী লোকদের আলাদা আলাদা আবাসন বাসস্থান রয়েছে, যেমন আর্মিদের জন্য ডি ও এইচ এস, নেভী হাউজিং, পুলিশদের জন্য পুলিশ হাউজিং, ব্যাংকার হাউজিং ইত্যাদি এবং বিশেষ ব্যক্তিদের জন্য উত্তরা, পূর্বাচল সুপরিকল্পিত নগরী।সেই ধারা বাহিকতায় মুক্তিযোদ্ধা গবেষণা ও কল্যাণ ট্রাস্ট, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান, নাতি/নাতনী, ও পোষ্যদের কল্যাণের জন্য মুজিবনগর নামে পূর্বাচলে সুপরিকল্পিত একটি স্যাটেলাইট টাউন নির্মাণের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে এই সিটি নির্মাণের জন্য ১১০০ বিঘা জমি নির্ধারণ করা হয়েছে।পরিকল্পিত সকল সুযোগ সুবিধার সমন্বয়ে মুক্তিযুদ্ধের আবহে তৈরী হবে মুজিবনগর সিটি।
মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে অস্থায়ী সরকার গঠন করা হয়, মুজিব নগর। তাই প্রজেক্টের নাম রাখা হয়েছে মুজিব নগর। মোট ১১টা সেক্টরে যুদ্ধ হয়েছে। তাই মুজিব নগরকে ১১টা সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে, এবং সবগুলো বিল্ডিং, রাস্তা-ঘাট, ইউনিভার্সিটি, মেডিক্যাল কলেজ, স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, যাবতীয় স্থাপনা আছে। সবগুলো জাতীয় চার নেতা, বীরশ্রেষ্ঠ, বীরউত্তম, বীরবিক্রম, এবং বীর প্রতিক খেতাব প্রাপ্ত এবং বিভিন্ন বাহিনীর দুরন্ত কমান্ডারদের নামে নামকরণ করা হবে। উল্লেখ্য থাকে যে কেউ মুজিব নগরে প্রবেশ করলে যাতে মনে হবে মুক্তিযুদ্ধের সময়টায় ফিরে এসেছি। এছাড়াও বাঙ্গালীর জাতীয় ইতিহাস ঐতিহ্য সংবলিত তথ্য সমূহ মুজিব নগরের প্রতিটি রাস্তা, দেয়াল, রেস্তোরা, অবকাশ কেন্দ্রেসহ সকল গুরুত্ব পূর্ণ স্থাপনায় শোভা পাবে। প্রতিটি দেয়ালে দেয়ালে বিভিন্ন স্থানসমূহে খোদাই করা হবে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরগাঁথা। অমর করে রাখা হবে বাঙ্গালী জাতির পূর্ব পুরুষ, মাতা ও ভগ্নিদের আত্মত্যাগ ও বিশ্বজয়ের ইতিহাস।
সূবিধা সমূহ
মুজিব নগরে বিশ্বমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন–মুক্তিযোদ্ধা বিশ্ববিদ্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা মেডিকেল কলেজ, পলিটেকনিক্যাল কলেজ, নার্সিং কলেজ, জেনারেল কলেজ, বাংলা মিডিয়াম, এবং ইংলিশ মিডিয়াম, স্কুল এন্ড কলেজ, গ্রন্থাগার, কোরআন রিসার্স সেন্টারসহ বিশ্বমানের গবেষণাগার। এছাড়াও মসজিদ, মাদ্রাসা, প্রাইমারি স্কুল আনুপাতিক হারে প্রতিষ্ঠা করা হবে। এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান/নাতি-নাতনীদের জন্য এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফ্রি স্কলারশিপের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান করা হবে। যেহেতু পূর্বাচল একটি পরিকল্পিত নগরায়ন। তাই ডিজনিল্যান্ড, পার্ক, মার্কেট, কাঁচা বাজার, চেইনশপ, ফাইভ স্টার হোটেল, কম্পিউটার সিটি, মুক্তিযোদ্ধা ক্লাব, একসাথে ২০টা অনুষ্ঠান করার মত কনভেনশন হল, প্রশাসনিক ভবন, ব্যাংক, বীমা, এল পি জি হাউজ,নিজেস্ব পাওয়ার স্টেশন, পানি, স্যুয়ারেজসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সমন্বয়ে মুজিব নগর তৈরী করা হবে।
মুজিব নগর সিটি অত্যান্ত সু-পরিকল্পিত একটি স্যাটেলাইট প্রকল্পো। প্রকল্পে দৃষ্টিনন্দন প্রবেশদ্বার, আন্তর্জাতিক মানের ইউনিভার্সিটি, মেজিকেল কলেজ, স্কুল, কলেজ, গ্রন্থাগার, ফাইভ স্টার, চেইন হোটেল, অত্যাধুনিক শপিংমল,পর্যাপ্ত মেলার মাঠ, নিরাপদ হাটার রাস্তা, নিজস্ব অভ্যান্তরিণ বাহন, মসজিদ, মাদ্রাসা, গির্জা, মন্দির, কবরস্থান, ডিজনি ল্যান্ড, পরিকল্পিত লেক, সহ বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, আরো থাকবে কৃত্রিম ঝর্ণা, বৃক্ষ শোভিত দৃষ্টিনন্দন লেক
ডি.ও.এইচ.এস এর মতো মুক্তিযোদ্ধারা সংঘবদ্ধভাবে একটি পরিকল্পিত নগরীতে বসবাস করবেন।মুজিব নগর একটি আন্তর্জাতিক শিক্ষা ও রিসার্চ কেন্দ্র, যেখানে দেশ বিদেশের শিক্ষার্থীরা জ্ঞান অর্জনের জন্য আগমন করবেন।
মুজিব নগরে যতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে, সবগুলোতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, নাতি/নাতনী পোষ্যরা ফুল ফ্রি স্কলারশিপে শিক্ষা অর্জন করতে পারবে। মুজিব নগরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যতিত ও সব শ্রেণীর প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, নাতি/নাতনী ও পোষ্যদের চাকরী ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ৮০% অগ্রাধীকার পাবে।
মুজিব নগরের ১নং সেক্টরকে বাণিজ্যিক সেক্টর হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এসব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে যেমন- বাজার, শপিংমল, ডিজনিল্যান্ড, সহ যে সকল দোকান বা অন্যান্য স্পেস বরাদ্দ দেয়া হবে। সে ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরাধিকারদের অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে।
মুজিব নগর প্রকল্পের চার ভাগের তিন ভাগ জায়গা গ্রীণ স্পেস হিসেবে ব্যব্হার করা হবে। তাই চাহিদার তুলনায় ৮০ ভাগ বেশি সবুজায়ন করা হবে।
প্রকল্পের থাকছে নিজস্ব ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র, গ্যাস সরবরাহ বা এল পি জি স্টেশন,ডিজিটাল ডাস্টবিন এবং ময়লা শোধনাগার।
সার্বক্ষণিক নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা বা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। পুলিশফারী, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন।
মুজিব নগর প্রকল্পে সর্ম্পূণভাবে যানজট, কালো ধোয়া, শব্দ দূষণ, জলাবদ্ধতা এবং মশক মুক্ত এড়িয়া।
মুজিব নগর সর্ম্পূণভাবে যানজট মুক্ত অটো সিগন্যাল পদ্ধতি আন্ডারপাস ইউটার্ন ব্যবস্থা থাকবে। সমস্ত বৈদ্যুতিক লাইন, ইন্টারনেট ও ডিস লাইনসহ যাবতীয় ক্যাবল মাটির নিচে দিয়ে স্থাপিত হবে।
মুজিব নগর প্রকল্পের অন্যতম সুবিধা হলো মূল প্রকল্পের চার ভাগের তিন ভাগ খোলামেলা, একটি ফ্ল্যাটের চার দিকেই আলো বাতাস পাবে, হাটার জন্য পর্যাপ্ত খোলা জায়গা, চাহিদার তুলনায় শিশু কিশোরদের তিন গুন বেশি খেলার মাঠ, জরুরী হট লাইন সেবা ২৪ ঘন্টা, প্রকল্পের চারদিকে দৃষ্টি নন্দন লেক।
পূর্বাচল এলাকায় সরকারের বহুমূখী উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মুজিব নগরের পাশেই আছে বিশ্বের অন্যতম দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সর্ব বৃহৎ সর্বাধুনিক ও সুপরিকল্পিত একটি নান্দনিক শহর রাজউক পূর্বাচল নিউ টাউন।
যোগাযোগের যুগান্তকারী ১৪ লেনের প্রসস্ত রাস্তা ৩০০ ফুট একাধিক রাস্তা। যা এখন দৃশ্যমান।
মুজিব নগরের ৫ কিলোমিটারের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সচিবালয়, বিদেশী দূতাবাস, বিভিন্ন মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানী, ওর্য়াল্ড ব্যাংক, ও রাজউক অফিসসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারী/বেসরকারী,আধা সরকারী অফিস অতি শীঘ্রই স্থানান্তরিত হচ্ছে।
পূর্বাচল শহরে আন্তর্জাতিক মানের একাধিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম , স্থায়ী বাণিজ্য মেলা, তথ্য প্রযুক্তির প্রধান কার্যালয়, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ১১১ তলা বিশিষ্ট ট্রাই টাওয়ার, পাশেই থাকছে জাপানী ইকোনমিক জোন (জাইকা) মেট্রোরেলের স্টেশন, পাতাল রেল স্টেশন, ওয়াটার বাসসহ বিভিন্ন বিনোদনের সংরক্ষিত স্থান।
রাজউক পূর্বাচল নিউ টাউন এরিয়া স্থাপিত হচ্ছে, যেখানে বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস, নবথিয়েটার, থ্রিডি থিয়েটার, প্লানেটরিয়াম, ওয়ার ওয়ার্ল্ড অত্যাধুনিক মিউজিয়ামসহ নানাবিধ স্থাপনা ও আধুনিক সভ্যতায় মিলন মেলায় পরিণত হচ্ছে।
প্রকল্পের অবস্থান
পূর্বাচল উপশহরের কাঞ্চন ব্রিজের পাশে, পূর্বাচল ও জাইকার সাথে সংযুক্ত ৩০০ ফিট রাস্তার সাথে। মুজিব নগর সিটির দক্ষিনে ইউএস বাংলার পরিকল্পিত নগরী, উত্তরে পুলিশ হাউজিং ফেস-টু। পশ্চিমে পূর্বাচল নগরী এবং পূর্বে জাপান ইকোনিমিক জোন। মৌজা- মোচার তালুক, কান্দাইল , গুতুলিয়া, রূপগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ এবং মাধবদী, নরসিংদী,